কৃষ্ণনাথ কলেজ বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হোক আরবী ভাষা দাবি পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার
খবর দিনভর ডেস্কঃ- পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভাপতি ডক্টর মোঃ মিনারুল শেখ ও সাধারণ সম্পাদক উবাইদুল্লাহ নুরি এক যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করেন যে, "পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলাতে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও মুসলিম বহুল জেলা মুর্শিদাবাদে কোন ইউনিভার্সিটি না থাকা ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি কলঙ্ক। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর আজও সেখানে কোন পূর্ণাঙ্গ ইউনিভার্সিটি না থাকা একটি লজ্জা জনক ও দুঃখজনক ঘটনা। শাসকদলের মানসিকতা অসাম্প্রদায়িক প্রমাণিত হওয়ার ক্ষেত্রে এই অভাব একটি বড় অন্তরায়। এই অন্তরায় দুর করার পূর্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার মানসিক নিরপেক্ষতা দাবি করতে পারে না। সব দিক লক্ষ্য রেখে মুর্শিদাবাদের জনগন দীর্ঘদিন ধরে ইউনিভার্সিটির জন্য দাবি ও আন্দোলন করে আসছে, যদিও এই দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের হওয়া মানবিক দায়িত্ব। একের পর এক সরকার গিয়েছে অাবার এসেছে কিন্তু মুর্শিদাবাদের মানুষের এই দাবি পূর্ণ করা হয়নি। তাদের বৈধ দাবিতে কেউ কর্ণপাত করেনি। কেন্দ্রে বিজেপি শাসন শুরু হওয়ার পর সাম্প্রদায়িক দুশ্চিন্তা দেশের সুস্থ্য শাসন ব্যবস্থাকে বহুমুখী প্রশ্নের সম্মুখীন করেছে। এই সন্ধিক্ষণে মুর্শিদাবাদে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্যের পরিপন্থী। তাই সার্বিক বিচারে মুর্শিদাবাদে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া আবশ্যক"।
তারা আরো বলেন "দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটি করার কথা ঘোষিত হওয়ার পর বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজকে ইউনিভার্সিটির রূপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং তার পাঠ্য বিষয় তালিকাতে আরবী ভাষা সাহিত্য না থাকা পূর্বের দীর্ঘ বঞ্চনার ধারাবাহিকতা ছাড়া কিছু নয়। কারণ, কৃষ্ণনাথ কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী কলেজ। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আদলে প্রতিষ্ঠিত এই কলেজকে তার বহাল তবিয়তে রক্ষা করা মানবিক দায়িত্ব। কৃষ্ণনাথ এর নাম বাদ দিয়ে মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটি নাম দেওয়া কতটা যৌক্তিক ও তার ভবিষ্যত নিয়ে ভাবা দরকার। এছাড়াও মুর্শিদাবাদের একাধিক কলেজে সংস্কৃতের সাথে সাথে আরবী ভাষা সাহিত্য পড়ানো হয়। এই অবস্থায় মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটিতে স্নাতকোত্তরে 80 টি সিট সংস্কৃতের পাশাপশি আরবী ভাষা সাহিত্যের স্থান না পাওয়াটা খুবই দুঃখজনক এবং এটা জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করবে। তাছাড়াও আরবী ভাষা জাতিসঙ্ঘের অন্যতম প্রধান ভাষা হওয়াই এর কোন গুরুত্বকে অস্বীকার যায় না। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ইউনিভার্সিটির পাঠ্য বিষয়ের তালিকাতে আরবী না থাকা মুসলিম অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদবাসীর জন্য অপমানজনক। তাই আমাদের দাবি মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটিতে আরবী ভাষা সাহিত্য যুক্ত করতে হবে"।
মুর্শিদাবাদ ইউনিভার্সিটি নিয়ে তাদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করার পাশাপাশি তারা বলেন যে, "পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা রুগ্ন হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বারবার প্রতিবন্ধকতা দেখা যাচ্ছে, যার ফলে যোগ্য চাকরী প্রার্থীরা মানসিক অবসাদের শিকার হচ্ছেন। এমনকি তারা হেনস্থা ও হয়রানীর শিকারও হচ্ছেন। ধীরে ধীরে সাধারণ পরিবার থেকে শিক্ষা প্রেম বিলীন হচ্ছে। তাই রাজ্য সরকারের নিকট আমাদের দাবি যে, পশ্চিমবঙ্গের মেরুদন্ড সোজা করতে সরকার যেন দ্রুত শিক্ষক নিয়োগসহ শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি অন্য বিষয়ের চেয়ে বেশী গুরুত্ব আরোপ করে"।
No comments